শালিক অতি পরিচিত পাখি। মাঝারি আকারের বৃক্ষচর এই পাখি Passeriformes বর্গের Sturnidae গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। Sturnidae শব্দটি লাতিন Sturnus থেকে নেওয়া। শালিকের ইংরেজি নাম স্টারলিং। বিশ্বে প্রায় ১০৪ প্রজাতির শালিক রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ প্রজাতি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়। বাংলাদেশে আছে ১২ প্রজাতি। এ দেশের কিছু স্থানীয় সাদা-কালো শালিককে ডাকা হয় গো-শালিক বা গোবরে-শালিক নামে। এদের ঠোঁটের রং গাঢ় কমলা-হলুদ এবং চোখের মণি হালকা হলুদ রঙের। অন্যদিকে ঝুঁটি-শালিকও সাদা-কালো রঙের হয় কিন্তু এর মাথায় একটি ঝুঁটি রয়েছে। গাঢ় বাদামি শালিককে বলা হয় ভাত শালিক। এদের ঠোঁট ও পা উজ্জ্বল হলুদ রঙের। এর বাইরেও রয়েছে গাঙশালিক, বামন-শালিক ইত্যাদি।
শালিকের স্বরতন্ত্রী বেশ জটিল হওয়ায় এদের ডাক বিচিত্র ও বিভিন্ন স্বরে ওঠানামা করে। এরা খুব সহজেই আশেপাশের আওয়াজ আর মানুষের কথা অনুকরণ করতে পারে। এরা মানুষের গলার স্বর শুনে নির্দিষ্ট কাউকে চিনতে সক্ষম এবং বর্তমানে এরা মানব ভাষা বিষয়ক গবেষণার বিষয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে।গায়ক পাখি হিসেবেও শালিকের বেশ সুনাম রয়েছে, তবে কাঠ-শালিক সবচাইতে ভালো গাইতে পারে। প্রায় সব প্রজাতির শালিকই বিভিন্ন স্বরে ডাকতে পারে এবং অন্য শালিকের কণ্ঠ নকল করতে পারে।
সামাজিক পাখি হিসেবে শালিকের সুনাম রয়েছে। এরা দলবেঁধে ডাকে ও ঝগড়াঝাঁটিও করে।
শালিক বাসা বানায় গাছের খোঁড়ল ও দালানের ফোকরে; কখনো গাছের ওপরে খড় ও ডালপালায় বড় গোলাকার কাঠামো তৈরি করে। ডিম পাড়ে ২ থেকে ৯টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫ থেকে ২১ দিন। বাচ্চা শালিক ১৯ থেকে ২৭ দিন পর উড়তে শুরু করে।









